সাংস্কৃতিক মনোবিজ্ঞান (Cultural Psychology) হলো মনোবিজ্ঞানের একটি শাখা, যা অধ্যয়ন করে আমাদের সংস্কৃতি—অর্থাৎ বিশ্বাস, রীতিনীতি, এবং সমাজের নিয়ম—কীভাবে আমাদের চিন্তা, আবেগ এবং আচরণ গঠন করে। এটা বলে যে মানুষের মন শুধু জৈবিক নয়, সংস্কৃতির দ্বারাও তৈরি হয়।
সাংস্কৃতিক মনোবিজ্ঞানের মূল বিষয়:
১. সংস্কৃতির প্রভাব:
- আমরা যে সমাজে বড় হই, সেটা আমাদের চিন্তার ধরন বদলায়।
- উদাহরণ: পশ্চিমে ব্যক্তিস্বাধীনতা বেশি জোর দেওয়া হয়, পূর্বে পরিবারের ওপর।
২. স্বতন্ত্র বনাম সমষ্টিবাদ (Individualism vs. Collectivism):
- স্বতন্ত্র সংস্কৃতি: নিজের লক্ষ্য বড় (যেমন, আমেরিকা)।
- সমষ্টিবাদী সংস্কৃতি: গোষ্ঠীর ভালো বড় (যেমন, ভারত)।
৩. মূল্যবোধ:
- সংস্কৃতি আমাদের কী ঠিক বা ভুল মনে করতে শেখায়।
- উদাহরণ: কোনো সমাজে বড়দের সম্মান বেশি গুরুত্ব পায়।
গুরুত্বপূর্ণ ধারণা:
- সাংস্কৃতিক নিয়ম (Norms): সমাজের অলিখিত নিয়ম আমাদের আচরণ গঠন করে।
- উদাহরণ: কোথাও জুতো খুলে ঘরে ঢোকা প্রথা।
- ভাষা: আমরা যে ভাষায় কথা বলি, সেটা আমাদের চিন্তার ধরন বদলায়।
- উদাহরণ: কিছু ভাষায় সময়কে সামনে-পিছনে দেখা হয়, কিছুতে উপর-নিচে।
- আত্ম-ধারণা (Self-Concept): সংস্কৃতি আমাদের নিজেকে কীভাবে দেখি, তা প্রভাবিত করে।
একটি উদাহরণ:
ধরুন, একটি গ্রামে সবাই একসাথে কাজ করে ফসল তুলে (সমষ্টিবাদ)। কিন্তু শহরে কেউ নিজের ক্যারিয়ারের জন্য একা কাজ করে (স্বতন্ত্রবাদ)। এই পার্থক্য সংস্কৃতি থেকে আসে।
কীভাবে ব্যবহার হয়?
- শিক্ষা: বিভিন্ন সংস্কৃতির শিশুদের শেখার ধরন বোঝা।
- ব্যবসা: আন্তর্জাতিক কোম্পানিতে সংস্কৃতি অনুযায়ী কাজ করা।
- চিকিৎসা: বিভিন্ন সমাজের মানুষের মানসিক সমস্যা বোঝা।
কেন সাংস্কৃতিক মনোবিজ্ঞান জানা দরকার?
- অন্য সংস্কৃতির মানুষকে বুঝতে ও সম্মান করতে।
- নিজের চিন্তার পেছনে সংস্কৃতির ভূমিকা চিনতে।
- বিশ্বব্যাপী সম্পর্ক ভালো করতে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন